1. news@bijoytv24.news : বিজয় বাংলা টিভি : বিজয় বাংলা টিভি
  2. info@www.bijoytv24.news : বিজয় টিভি ২৪ :
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন

কুলিয়ারচরে মাদ্রাসা ও মসজিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ইলিয়াস মাহমুদ কাশেমী রাসেলের বিরুদ্ধে

শাহীন সুলতানা, কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ)
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৯১ বার পড়া হয়েছে

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় ইসলামিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া আরাবিয়া নুরুল উলুম কুলিয়ারচর মাদ্রাসা ও কুলিয়ারচর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। এই দুটি প্রতিষ্ঠান কুলিয়ারচর বাজার চার রাস্তার মোড়ে অবস্থিত। এই মাদ্রাসার সুনাম রয়েছে কয়েকটি জেলার মধ্যে।

মাদ্রাসার কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করে গত ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাশেমী রাসেলের বিরুদ্ধে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন কুলিয়ারচর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও কুলিয়ারচর বাজারের বিশিষ্ট কাপড় ব্যবসায়ী মো. গোলাম কিবরিয়া। তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি মো. গোলাম কিবরিয়া থেকে পোস্ট করে লিখেছেন, এ মাদ্রাসা নিয়ে তিনি গর্ববোধ করেন। এই মাদ্রাসায় দূরদূরান্ত থেকে অনেক ছাত্র পড়াশোনা করতে আসে। একসময় এই মাদ্রাসায় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন আলহাজ্ব মরহুম মুসা মিয়া সিআইপি এবং তাঁর ছেলে ইমতিয়াজ বিন মুসা জিসান। তারা ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুবাদে মাদ্রাসায় তেমন সময় দিতে পারেননি। সেজন্যই তারা মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাশেমী রাসেলকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান অনেক বড় মনের মানুষ। সে মাদ্রাসার আয়-ব্যায় এর কথা রাসেলকে জিজ্ঞেস করলে রাসেল বলেন কোন রকম টানাটানির মধ্যেই মাদরাসাটি চলছে। গোলাম কিবরিয়ার প্রশ্ন হলো, এ পর্যন্ত জামিয়া আরাবিয়া নুরুল উলুম কুলিয়ারচর মাদ্রাসা ও কুলিয়ারচর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হলো ৪৩ লক্ষ টাকা। তিনি খবর নিয়ে জেনেছেন, যত গুলো ছাত্র পড়াশোনা করেছেন তাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিল ও পানি বিল নেওয়া হয়েছে। উপযুক্ত প্রমাণ হিসে রশিদ সংরক্ষিত আছে। এই মাদ্রাসার অধীনে প্রায় ৪০ টি দোকান আছে। প্রতিটি দোকান থেকে প্রতি মাসে নূন্যতম ভাড়া আদায় করা হয় ১০ হাজার টাকা করে। এ হিসেবে দোকান থেকে প্রতি মাসে আসে ৪ লক্ষ টাকা।
বছরে আসে ৪৮ লক্ষ টাকা। তিনি আরো উল্লেখ করেন, মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাশেমী রাসেল ১৭ বছরেরও উপরে সে এ মাদ্রাসার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ১৭ বছরে এ মাদরাসায় আয় হওয়ার কথা ৮ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা। তার দাবী এত টাকা কোথায় গেলো? এত টাকা দিয়ে কি করছে এটা তিনিসহ কুলিয়ারচরের সর্বস্তরের মানুষ জানতে চান।

কেননা, মাদ্রাসা ও মসজিদের নামে ৪৩ লক্ষ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া আছে, সেটা কে পরিশোধ করবেন ? বিদ্যুৎ ও পানি না থাকলে মাদ্রাসার ছাত্ররা কি ভাবে পড়াশোনা করবে?

গোলাম কিবরিয়া তার স্ট্যাটাসের মাধ্যমে পলাতক মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাশেমী রাসেলকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কুলিয়ারচরের মাটিতে এনে এগুলো সমাধানের জোর দাবি জানান।

বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় গত ২ অক্টোবর বুধবার আবাসিক প্রকৌশলী কার্যালয় থেকে লোকজন এসে মাদ্রাসার দুইটি ও মসজিদের একটি এনালগ মিটারের বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পরে বকেয়া বিল যাতে আর বৃদ্ধি না পায় সে জন্য প্রিপেইড ডিজিটাল মিটার স্থাপন করে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ দিয়ে যায়। এ নিয়ে মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাশেমী রাসেলের প্রতি মুসুল্লিদের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়।
মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাশেমী রাসেল অলিখিতভাবে জামিয়া আরাবিয়া নূরুল উলুম কুলিয়ারচর মাদ্রাসা ও কুলিযাচার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সকল দায়- দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া তিনি কুলিয়ারচর পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব ও কুলিয়ারচর বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন।

জামিয়া আরাবিয়া নুরুল উলূম কুলিয়ারচর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, ৪৩ লক্ষ টাকার উপরে মাদ্রাসা ও মসজিদের বকেয়া বিল পরিশোধ করা হয়নি। বকেয়া যাতে আরো বৃদ্ধি না হয় সেজন্য গত ২ অক্টোবর বুধবার আগের মিটারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে নতুন করে প্রিপেইড ডিজিটাল মিটারে সংযোগ দিয়ে যান বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন।

আবাসিক প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম সেলিম ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শামীম আকন্দ বলেন, ২০০৮ সাল থেকে (সার্ভারের তথ্য অনুযায়ী) এ পর্যন্ত জামিয়া আরাবিয়া নুরুল উলূম কুলিয়ারচর মাদ্রাসা ও কুলিয়ারচর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের তিনটি মিটারের মধ্যে শুধু একবার ২০১৩ সালের ৩০ জুন মাদ্রাসার একটি বিল ৬৩০৩ টাকা ও আরেকটি বিল ৬৩০০ টাকা এবং মসজিদের একটি বিল ১৩৫৫৭.৪৪ টাকা পরিশোধ করা হয়। এর আগে ও পরে ১৯ বছরের মধ্যে আর কোন বিল পরিশোধ করা হয়নি। বর্তমানে মাদ্রাসার একটি বিল বকেয়া আছে ১৪ লক্ষ ৭৫ হাজার ৮১৮ টাকা, আরো একটি বিল বকেয়া আছে ১৫ লক্ষ ৫২ হাজার ৮১০ টাকা এবং মসজিদের একটি বিল বকেয়া আছে ১৩ লক্ষ ৫৪ হাজার ১৭৪ টাকা। সর্বমোট তিনটি মিটারে বকেয়া আছে ৪৩ লক্ষ ৫৫ হাজার ৮০২ টাকা। এসব বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য একাধিকবার তাগিদ দিলেও বিল পরিশোধ না করায় ২ অক্টোবর বুধবার পূর্বের এনালগ মিটার থেকে লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়। আর যাতে মসজিদ ও মাদ্রাসায় বিল বকেয়া না হয় সেজন্য তিনটি প্রিপেইড ডিজিটাল মিটার স্থাপন করে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ দেওয়া হয়। গোলাম কিবরিয়ার স্ট্যাটাসের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে অনেকেই মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাশেমী রাসেলের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানান।
এ স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাশেমী রাসেলের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ ও জায়গা-জমি জবরদখলের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। মুখ খুলতে শুরু করেছে ভুক্তভোগীরা। সালিশের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বহু অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এব্যাপারে মুফতি ইলিয়াস মাহমুদ কাশেমী রাসেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবী করে তিনি বলেন, গোলাম কিবরিয়া তার ব্যবহৃত ফেসবুক স্ট্যাটাসে মাদ্রাসার আয়ের কথা উল্লেখ করেছে। কিন্তু প্রতিমাসে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা যে ব্যয় হয় তা উল্লেখ করেনি। তিনি আরো বলেন, ছাত্রদের নিকট থেকে শুধু বিদ্যুৎ বিলের টাকাই নেওয়া হয়না। বিদ্যুৎ বিল ও জেনারেটরের ডিজেল খরচ বাবদ প্রতি বছর প্রতি শিক্ষার্থীর নিকট থেকে ৬০০টাকা করে নেওয়া হয়। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কুলিয়ারচর পৌরসভার সকল মসজিদ মাদ্রাসার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে।

কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবার ধারনা ছিলো সরকার মসজিদ মাদ্রাসার বিদ্যুৎ বিল মওকুফ করে দিবে। তাই বিদ্যুৎ বিল জমা দেওয়া হয়নি। মাদ্রাসার সকল আয়-ব্যয়ের হিসাব নিকাশ কোষাধ্যক্ষের নিকট সংরক্ষণ আছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত