মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা আজ বুধবার (১০ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে দেশব্যাপি। এই পরীক্ষায় রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের মেধাবী পরীক্ষার্থীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছে। শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরাও। কারণ, বিগত পরীক্ষায় ওই কেন্দ্রে ব্যাপকভাবে নকল সরবরাহ, নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল। রাজনৈতিক নেতার পাশাপাশি শিক্ষকদের অর্থের বিনিময়ে নকল সরবরাহ করতে দেখা গেছে। এ কারণে অনেক দুর্বল পরিক্ষার্থী ভালো রেজাল্ট করে মেধাবীদের মনোবল ভেঙে দিয়েছে।
পরীক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পরীক্ষা শুরুর আগেই আশপাশের ৪/৫ টি কোচিং সেন্টারের পরিচালকগণ তাঁদের শিক্ষার্থীদের নিশ্চিয়তা দিয়েছেন- যেভাবেই হোক এবারও তাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে। কোচিংগুলো শিক্ষার্থীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলে, ‘আমাদের কোচিং স্যারেরা ইংরেজি এবং গণিত পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন।’
পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, এই এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্র এবার মোট ৯টি বিদ্যালয়ের এক হাজার ৬৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এই কেন্দ্রের বিদ্যালয়গুলোর অনেক শিক্ষক কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত। এমনকি অনেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করবেন। গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অসদুপায় সুবিধা দেওয়ায় এবারও কোচিং শিক্ষকরা বাড়তি আশ্বাস দিয়ে মোটা অংকের টাকা নিচ্ছেন।
কয়েকটি কোচিং সেন্টারের পরিচালকদের সঙ্গে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা নাম প্রকাশ না শর্তে বলেন, ‘অভিযোগ সঠিক নয়। ভাল ফলাফলের জন্য টাকা আদায় ও অন্যান্য তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্রসচিব মাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘এবার এধরনের কোনো সুযোগ নেই। কোচিং সেন্টারের শিক্ষকরা কক্ষ পরিদর্শক থাকতে পারবেন না। বোর্ডের কড়া নির্দেশ আছে। নকল সরবার করতে দেওয়া হবেনা। আমার বিরুদ্ধে আনা অন্যান্য সব অভিযোগও সঠিক নয়। সব মিথ্যা।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মমিন মন্ডল বলেন, ‘যেসব কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ বা পূর্বে অনিয়ম হয়েছে, এবার সেসব কেন্দ্রে বেশি তদারকি করা হবে। কোনো কোচিং শিক্ষক পরিদর্শক থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘পায়রাবন্দ কেন্দ্রের নিরাপত্তা এবং সুষ্ঠুভাবে পরিক্ষা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাড়তি নজরদারিতে থাকবে কেন্দ্রটি।’