জুলাই আন্দোলনে নিহত মোঃ জাকারিয়া হাসান (জুয়েল) এর পুরানো স্মৃতি মনে করে ঈদের দিন থেকে আজ পর্যন্ত কবরের পাশে বিলাপ করছেন তার মা ঝর্ণা বেগম। জুয়েলের বাবা আকবর আলী শেখ (৬৯) ছেলের শোকে সকাল থেকে ঘর হতে বের হননি, কারো সঙ্গে কথাও বলেননি। মোঃ জাকারিয়া হাসান (জুয়েল) এর একমাত্র বড় ভাই মোঃ জহিরুল হাসান শেখ ছোট ভাইয়ের কথা মনে করে বাড়ির কোণে একা চুপচাপ বসে আছে, কারোর সঙ্গে কথা বলছে না।
জাকারিয়া হাসানের মা ঝরণা বেগম (৫৫) বাড়ির উঠানে বসে বাকরুদ্ধ হয়ে চোখের পানি ফেলছেন। কান্নায় ভাষাও হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। বলতে পারছেন না কিছুই।
বুধবার ঈদের ৩য় দিন সকালে কালীগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওর্য়াড দেওপাড়া জাকারিয়া হাসানের বাড়ি গিয়ে পরিবারের কারোর পরনে নতুন জামা-কাপড় দেখা যায়নি। এমনকি ঈদ উপলক্ষ্যে সকাল থেকে ছিল না কোনও রান্নাবান্নার আয়োজন।
সেখানে কথা হয় জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় উত্তরাঅঞ্চলের সংগঠক এম এম শোয়াইবের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত গণঅভ্যুত্থানে গাজীপুর কালীগঞ্জ থেকে দুই(০২) জন শহীদ হয়েছেন। এদের একজন হচ্ছেন শহীদ জাকারিয়া। আমরা আজ জাকারিয়ার পরিবারের নিকট এসেছি। পরিবারের যারা মেব্বার ছিলেন ঈদ পরর্বতী আমরা শুভেচ্ছা বিনিময় করতে এসেছি। পরিবারের সাথে কথা বলেছি। তাদের পরিবারের দাবি আমরা শুনেছি।
নিজ সন্তানের কথা স্বরণকরে শহীদের পিতা আকবর আলী শেখ বলেন, কালীগঞ্জ মডেল মসজিদ এবং ঈদগা মাঠটি যেন শহীদ জাকারিয়া হাসানের (জুয়েল) নামে নাম করণ করা হয়। এতে করে সবার মাঝে মোঃ জাকারিয়া হাসান (জুয়েল) বেচেঁ থাকবে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরুর সময় মোঃ জাকারিয়া হাসান (জুয়েল) গণঅভ্যুথানে ঢাকা উত্তরা লাজলক্ষী পুলিশের গুলিতে নিহত হন। নববিবাহিত দম্পত্তি ছিলেন মোঃ জাকারিয়া হাসান (জুয়েল) ও তার স্ত্রী। বিবাহের ২৫ দিনের মাথায় সংসার থেকে চিরতরে ওপারে চলে যান শহীদ মোঃ জাকারিয়া হাসান (জুয়েল)।
পরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় উত্তরাঅঞ্চলের সংগঠক এম এম শোয়াইব, কালীগঞ্জ জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য রাকিব শেখ, আবু সাঈদ অয়ন, শাহাদাত, সৈকত ও মোঃ শিহাব উদ্দিন প্রমুখ মোঃ জাকারিয়া হাসান (জুয়েল)সহ সকল শহীদদের রুহের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে কবর জিয়ারত করেন।